দীর্ঘদিন আড়ালে থাকা বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর শরিফুল হক ডালিম (বীর উত্তম) প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেনের ইউটিউব চ্যানেলে লাইভ টকশোতে যুক্ত হয়ে প্রায় ৫০ বছর পর বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত এবং ৭৫-এর সামরিক অভ্যুত্থানের অন্যতম আলোচিত চরিত্র।
রোববার (৫ জানুয়ারি) রাতে ইলিয়াস হোসেনের চ্যানেলে ‘বিশেষ লাইভে যুক্ত আছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর ডালিম (বীর উত্তম)’ শিরোনামে প্রচারিত এই টকশো মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়।
লাইভ টকশোতে মেজর ডালিম মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি, ৭৫-এর ১৫ আগস্টের সামরিক অভ্যুত্থান এবং এর পেছনের কারণগুলো নিয়ে আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, ‘‘দেশের নতুন প্রজন্মের ছাত্র-জনতাকে শুভেচ্ছা জানাই। তারা যেটুকু বিজয় অর্জন করেছেন, সেটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। তবে তাদের বিপ্লব এখনো সম্পূর্ণ হয়নি। আরও সময় ও প্রচেষ্টা প্রয়োজন।’’
ডালিম বলেন, ‘‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময়ই বুঝতে পারি, এটি কার স্বার্থে হচ্ছে। ৭১-এর স্বাধীনতার মতো আমাদের এখনো ভারতের সম্প্রসারণবাদী নীতির কবল থেকে মুক্ত হতে হবে। তা না হলে বিপ্লব ব্যর্থ হবে।’’
৭৫-এর হত্যাকাণ্ড নিয়ে মেজর ডালিম বলেন, ‘‘১৫ আগস্ট কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি শুরু হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে। মুজিবের শাসনকালে স্বৈরাচারী আচরণ ও জুলুম মানুষকে মুক্তির জন্য রাস্তায় নামতে বাধ্য করেছিল।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘মুজিব একটি সেনা অভ্যুত্থানে নিহত হন। সেখানে উভয় পক্ষেই হতাহত হয়। তবে বিপ্লবীরা জয়ী হয়েছিল এবং ক্ষমতা দখল করেছিল।’’
ডালিম বলেন, ‘‘বর্তমান প্রজন্মের বিপ্লবীদের প্রয়োজন হলে আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা দিয়ে সাহায্য করতে প্রস্তুত। তাদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা এবং শুভকামনা রইল।’’
জাতীয় সংগীত নিয়ে ডালিম বলেন, ‘‘বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত ভিনদেশি কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের না হয়ে কাজী নজরুল ইসলাম বা কোনো দেশীয় কবির লেখা হতে পারত। এটি পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল যে একটি স্বাধীন দেশের সংগীত ভিনদেশি কবির লেখা।’’
এই টকশোতে মেজর ডালিমের বক্তব্যগুলো নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে এবং তা নিয়ে দেশে-বিদেশে আলোচনা চলছে।